মহাসড়ক নিয়ে জেলা পুলিশের পদক্ষেপ স্থবির!
চলছে থ্রি-হুইলার ও ইজিবাইক : বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি
এম. এ ইসলাম:
পবিত্র মাহে রজমান উপলক্ষে মহাসড়কে যানবাহনের নির্বিঘ্ন চলাচলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে ধাপেরহাট পর্যন্ত দীর্ঘ ৩২ কিলোমিটার রাস্তা যানজট মুক্ত রাখতে জেলা পুলিশের উদ্যোগ স্থবির হয়ে পড়েছে। আগের মতই মহাসড়কের এ অংশে থ্রি-হুইলার ও ইজিবাইকের দৌরাত্ব ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত বুধবার (৬ মে) দিনভর জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের টিআই (প্রশাসন) নূর আলম সিদ্দিক, গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি ইজার উদ্দিন, পলাশবাড়ী থানার ওসি মাসুদুর রহমান মাসুদ, সাদুল্যাপুর থানার ওসি প্রদীপ কুমার এবং হাইওয়ে থানার চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টিআই প্রবীন কুমার পালকে নিয়ে সতর্কীকরণ এক অভিযান পরিচালনা করেন।
রমজান মাসজুড়ে মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখা, ঈদে মানুষের নিরাপদে যাত্রা ও সড়কে দুর্ঘটনার হার কমানোর অংশ হিসেবে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। এর আগে মহামান্য আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে মহাসড়কে চলাচলকারী সকল অবৈধ অটোভ্যান, অটোরিক্সা, ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক, সিএনজি, শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমন ও ট্রলি এবং এমপি থ্রি (ট্রাক্টর) এর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি এ উদ্যোগের বড় কারণ। কিন্তু জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ের সাথে নিষিদ্ধ গাড়ির কথিত সমিতির সদস্যদের সাথে অদৃশ্য সখ্যতার কারণে জনস্বার্থে নেয়া উদ্যোগটি আলোর মুখ দেখছে না। এ যেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চালাকালীন সময়ে শিল্পী রথীন্দ্র নাথের গাওয়া সেই সুরেরই নামান্তর “পরানের বন্ধুরে বলবো কি তোরে আমার ক্ষেতের সোনার ধান খাইলো ইন্দুরে”। সড়কে জেলা পুলিশের সুনাম নষ্টে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই মূলত দায়ি করছেন ভুক্তভোগীরা।
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী ও সাদুল্যাপুর উপজেলার উপর দিয়ে মহাসড়কের এ অংশে দিন-রাত নিষিদ্ধ যানগুলোর নির্বিঘ্ন চলাচল চোখে পড়ার মত।
গোবিন্দগঞ্জ:
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাপড়ীগঞ্জ-ফাঁসিতলা রুটে নিষিদ্ধ যানগুলো নিয়মিত চলাচল করছে। পৌরশহরের উপজেলা গেট সংলগ্ন চতুরঙ্গ মোড়ে মহাসড়কের দু’পাশে সিএনজি-ইজিবাইক-ভ্যান চালকদের নির্দিষ্ট স্থান থেকে এদের যাতায়াত। অপরদিকে থানা চারমাথায় ট্রাফিক জোনের পঞ্চাশ গজ উত্তরে বনফুল হোটেলের সামনে থেকে নিয়মিত বালুয়া, নাকাই, কালিতলা, কোমারপুর ও পলাশবাড়ী রুটে যাত্রী নিয়ে এদের চলাচল অপ্রতিরোধ্য। গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মোড় ও রাজমতি মোড় থেকে নিয়মিত যাতায়াত করছে আমতলী ও সরদারহাটের থ্রি-হুইলার সিএনজি, ইজিবাইক।
পলাশবাড়ী:
জেলার পলাশবাড়ী সোনালী ব্যাংকের সামনে থেকে মহাসড়ক ব্যবহার করে ধাপেরহাট; পোস্ট অীফসের সামনে থেকে কোমরপুর-বালুয়ায় এবং চারমাথা থেকে ঢোলভাঙ্গা-তুলসীঘাট সহ জেলা সদরে অবাধ চলাচল করছে এ শ্রেণির যানগুলো।
সাদুল্যাপুর:
উপজেলার ধাপেরহাট থেকে মহাসড়ক ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ যানবাহনগুলো আগের মতই নিয়মিত যাতায়াত করছে। এ রুটে সন্ধ্যার পর প্রতি ঘণ্টায় ১০টাকা করে ভাড়া বৃদ্ধির প্রবণতা তো আগেই থেকেই রয়েছে। এটার কারণও নাকি কর্তাদের সন্তুষ্টি।
সচেতন মহলের অভিযোগ মহামান্য হাইকোর্ট থেকে মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানগুলোর অবাধ যাতায়াত বন্ধে জেলা পুলিশের উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু থানা পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ এবং হাইওয়ের কিছু অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে গৃহীত উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে এসব অসৎ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও তাদের।
মহাসড়কে দুর্ঘটনারোধ ও বৈধ যানবাহনের নির্বিঘ্ন চলাচলে জেলা পুলিশের উদ্যোগ মাঠ পর্যায়ে স্থবিরতা প্রশ্নের মুঠোফোনে জেলা পুলিশ সুপার জানান, মহাসড়ক নিয়ে গৃহীত নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে আমি গোবিন্দগঞ্জ হইওয়ে ও জেলা ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলছি। নির্দেশনাগুলো অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।