গোবিন্দগঞ্জে বালু-মাটি উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধে ব্যর্থ প্রশাসন: সাত দিনের আল্টিমেটাম
রুবেল ও মিলনের মৃত্যুতে বিক্ষুব্ধ মানববন্ধনে এম এ মতিন মোল্লা
স্টাফ রিপোর্টার:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের নদী-নালা-খাল-বিল ও ফসলি জমির ভূ-গর্ভস্থ থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন-পরিবহন বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। ব্যর্থতার দায় এড়িয়ে দ্রুত এ উপজেলায় বালু -মাটি উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আহবায়ক এম এ মতিন মোল্লা।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় গোবিন্দগঞ্জ চারমাথায় বালুবাহী ট্রাক চাপায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রশিদুল ইসলাম রুবেল ও সম্প্রতি চারমাথায় ফল ব্যবসায়ী মিলন সহ একাধিক হত্যা ও মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ মানববন্ধনে তিনি এ আহ্বান জানান। মানববন্ধনে সচেতন নাগরিক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির আয়োজনে ও নাগরিক কমিটির আহবায়ক এম এ মতিন মোল্লার সভাপতিত্বে ঘন্টাব্যাপী উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা জেএসডি’র সভাপতি আইয়ুব হোসেন সরকার, সাধারণ সম্পাদক আরজ আলী, উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মোবারক, প্রেস ক্লাব গোবিন্দগঞ্জ সভাপতি প্রভাষক শাহ রফিকুল ইসলাম, রিপোর্টাস ফোরাম সভাপতি শাহ আলম সরকার সাজু, নিহত শিক্ষক রুবেলের সহকর্মী শরিফ উদ্দিন।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা বাসদ সভাপতি কমরেড রফিকুল ইসলাম রফিক, গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন আকন্দ, জাতীয় মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সাজাদুর রহমান সাজু প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে অবৈধ বালু পরিবহনে নাম্বারবিহীন গাড়ী মহাসড়কসহ সকল আঞ্চলিক সড়কে চলাচল বন্ধ করে অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
এম এ মতিন মোল্লা বক্তব্যে বলেন- গোবিন্দগঞ্জে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন ও পরিবহন আজকের ঘটনা নয়। বছরের পর বছর ধরে এই অবৈধ বালু-মাটি উত্তোলন করে তা কাগজপত্রহীন ওভারলোডবাহী ড্রাম ট্রাকে বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করছে। বিভিন্ন সময় আন্দোলন হয়েছে; লিখিত অভিযোগ করার পরও উপজেলা প্রশাসন, থানা, ট্রাফিক, হাইওয়ে পুলিশ সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নীরব রয়েছে। অদৃশ্য কারণে তাদের নীরবতা বলে দেয় তারা ব্যর্থ। আগামী সাত দিনের মধ্যে অবৈধভাবে বালু-মাটি উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সর্বস্তরের নাগরিকদের নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ সহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, অবৈধ বালু পরিবহনে ব্যবহৃত ড্রাম ট্রাক চাপায় চারমাথায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ৬ ডিসেম্বর রাত ১২টায় ফল ব্যবসায়ী মিলন ও সোমবার ৯ জানুয়ারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রশিদুল ইসলাম রুবেলসহ ৩ জন নিহত হয়। এছাড়াও নদীর ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলনের ফলে সৃষ্ট গর্তে পরে একাধিক শিশু ও বৃদ্ধার মৃত্যু হয়।