ধ্বসে যেতে পারে বিদ্যুৎ পোল-ব্রিজ-মহাসড়ক
নিশ্চিহ্নের মুখে স্বপ্নের চর
এম. এ ইসলাম:
লুট হয়েছে করতোয়া ও বাঙালি নদীর ভ‚-গর্ভস্থ বালু। এখনও চলছে পুরো উপজেলাজুড়ে; থেমে নেই তাদের কর্মযজ্ঞ। দেশের মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন ও প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে লুটেরাদের দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলার দৃশ্য গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। এবার লুটেরাদের করাল গ্রাসে নি:চিহ্নের পথে করোতায়ার বুকে জেগে ওঠা শতবর্ষী স্বপ্নের চর। যার প্রভাবে অচিরেই ধ্বসে যেতে পারে ১১ হাজার ভোল্ট এর সরবরাহ লাইনের বিদ্যুৎ পোল, ঢাকা রংপুর মহাসড়ক, কাটাখালী ব্রিজটি ও বড়দহ সেতু।
সর্বপরিচিত বালুয়া বাজারের বালু লুটেরা সানা মিলেটারি নেতৃত্বে থেকে ফুলবাড়ির পাশা মেম্বার ও আশরাফুলদের সাথে নিয়ে চর কেটে বিক্রি করছে। আর চরের নদীর পাশটা কেটে বিক্রির দীর্ঘদিনের কাজটা চলমান রেখেছে পাশ^বর্তী দুই ইউপি চেয়ারম্যানের লোকেরা। যা স্থানীয়দের দাবি। তারা আরও দাবি করেন- এরা সম্মিলিতভাবে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের কাটাখালী ব্রিজ সংলগ্ন উভয় পাশে করতোয়ার ভূ-গর্ভস্থ বালু লুটের পর বর্তমানে পশ্চিম তীরে জেগে ওঠা শতবর্ষী স্বপ্নের চরকে রাতের আঁধারে কেটে নি:চিহ্ন করতে উঠে পড়ে লেগেছে। যা বগুড়া, দিনাজপুর, জয়পুরহাট পাচারের পাশাপাশি বালুয়াস্থ চায়না কোম্পানীর আল-আমিনের কাছে বিক্রি করছে।
সম্প্রতি উপজেলার শতাধিক বালু উত্তোলন পয়েন্ট বন্ধ থাকলেও অনেকটাই ব্যয় সাপেক্ষ কৌশলে করতোয়ার স্বপ্নের চর, হাওয়াখানা, বড়দহ সেতুর উভয় পাশ, খলসী, চকরহিমাপুর ও মহিমাগঞ্জ থেকে বালু বিকিকিনি চলছে। পয়েণ্টগুলো অঘোষিত বালুমহালে রূপ নিয়েছে। যেখানে রাজস্ব সরকার নয়; লুটেরাদের কেউ সেফটি প্রতি, কেউ গাড়ি প্রতি মোটা অংকের চাঁদবাজি করছে।
নভেম্বরের শুরুতেই বড়দহ সেতু এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালতের ভয়ে একাধিক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা বন্ধ থাকলেও শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকাল থেকে তা পুরোদমে চালু হয়েছে। বড়দহ সেতু রক্ষায় যেখানে কোটি টাকা ব্যয়ে তীর রক্ষার পাইলিং কাজ চলছে; ঠিক তার পাশ থেকেই বালু দস্যুরা ড্রেজার বসিয়ে ভূ-গর্ভের বালু তুলছে।
অপরদিকে কাটাখালী ব্রীজের পশ্চিমের আশা জাগানিয়া চর থেকে গাড়ি প্রতি ১ হাজার টাকায় বালু বিক্রি চলমান রয়েছে। যা চিহ্নিত বালু দস্যুদের একাধিক সদস্যের কাছে বিক্রি করছে জনৈক সরোয়ার সহ আরও অনেকে। ফলে পাশের চর মালিকরা তাদের জমিতে কোন ফসল ফলাতে পারছে না। চরটিতে ইতিমধ্যে অর্ধ-শত গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অচিরেই স্বপ্নের এ চরটি বিলীন হয়ে যাবে বলে অনেকেরই আশঙ্কা। যোগাযোগ ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া কাটাখালী ব্রিজ ও বড়দহ সেতুকে রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে বালু দস্যুদের আইনের আওতায় আনার দাবি স্থানীয়দের।
(বি: দ্র: সংবাদটি সাপ্তাহিক খোলা হাওয়া পত্রিকার ১৮তম বর্ষের ১৫তম সংখ্যায় (রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২ প্রকাশিত)