1

জলবায়ু-পরিবেশ-কৃষি-শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে ইটভাটা চালুর আয়োজন

এম.এ ইসলাম :
জলবায়ু নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব। এর বিরূপ প্রভাবে ঝুঁকির তালিকায় বাংলাদেশের নামও রয়েছে। দায়ী দেশগুলোর তালিকায় এই দেশটি শেষ দিকে থাকলেও ক্ষতির তালিকায় প্রথম। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান ওয়াচ সিআরটি অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে রেখেছে প্রথমে। প্রাকৃতিক কারণের পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট কারণও জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে ইট-ভাটার কয়লা ও কাঠের ধোঁয়া কম দায়ী নয়। পরিবেশ দূষণের কারণগুলোর মধ্যে সারাদেশে যত্রতত্র গড়ে ওঠা ইট ভাটা বহুলাংশে দায়ী। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে আমাদের কৃষির ওপর। ইট-ভাটার চারপাশে ফসলি জমিগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতির মুখে রয়েছে। কখনো কখনো ভাটার বিষাক্ত ও উত্তপ্ত গ্যাস মুহূর্তেই কৃষকের সোনার ফসল ধ্বংস করছে।

অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘেঁষে গড়ে উঠা ইট-ভাটাগুলো আমাদের বিবেককে মর্মাহত করলেও; কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর রয়েছে নিশ্চুপ। বলতে হয়, ইট-ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসে মিশে কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে আম-পাবলিককে স্বাস্থ্য ঝুকিতে ফেললেও; তা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কে? দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের হাতে অসংখ্য ইট-ভাটার তালিকা রয়েছে। জানতে চাইলে হাতে গোনা কয়েকটিকে বৈধ আর অবশিষ্টগুলোর বৈধতা নেই বলতে শোনা যায়। কিন্তু সব দপ্তর থেকে অনুমোদনের কাগজপত্র না থাকলেও কর্তৃপক্ষ এগুলোকে অবৈধ বলবে কী? আম-জনতা আর আমরা; সবাই তাঁদের মুখ পানে চেয়ে আছি।

যদি অবৈধ হয়ে থাকে তবে চলতি মওসুমের শুরুতেই এগুলো ধ্বংস বা বন্ধ হওয়া জরুরি। উৎকোচ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে মওসুমের মাঝ পথে ভাটার আগুনে পানি ঢেলে কয়েকদিন বন্ধ রেখে লাভ কী?

জেলার কয়েকটি পৌরসভা সহ পল্লী এলাকায় এসব অনিয়ন্ত্রিত ও অবৈধ ইট ভাটা স্থাপন ও ইট পোড়ানোয় এবারও কৃষি আবাদি জমি, গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট নষ্ট সহ জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ফেলবে। ফলে পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি জনসাধারণ পড়বে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। আর ইট ভাটা নিয়ন্ত্রণ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার রহস্যজনক ভ‚মিকায় সচেতন মহল হবে ব্যথিত।

ইট ভাটা নিয়ন্ত্রণ সংশোধিত আইন ২০১৩ ও সংশোধিত ২৮ ফেব্রæয়ারি ২০১৯ এর বিভিন্ন অনুচ্ছেদের ধারা ও উপধারায় বর্ণিত বিধি-নিষেধ অবজ্ঞা করে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় নিজ নিজ ভাটা চালু করছে ভাটা মালিকরা। প্রতিটি উপজেলায় গড়ে উঠেছে ইট-ভাটা মালিক সমিতি। সব মহলকে ম্যানেজ করতে শুরু হয়েছে তাদের তৎপরতা।