1

অবশেষে ভাঙা হলো ৬২ চুল্লি

অবশেষে ভাঙা হলো ৬২ চুল্লি
প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় এবার নজর আসুক অবৈধ ইট ভাটায়

এম. এ ইসলাম:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা উৎপাদনে গড়ে ওঠা শতাধিক কারখানার অধিকাংশ গুড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন। পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলা এসব চুল্লি বিগত কয়েক বছর থেকে বিভিন্ন পন্থায় চালু ছিল। যা ধ্বংসে একাধিক সংবাদ স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রচার পেলেও গোবিন্দগঞ্জ নাগরিক কমিটি বাধ্য হয়ে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণে স্মারকলিপি প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানে নামে।

এসময় মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে ৬২টি অবৈধ চুল্লি সম্পূর্ণ গুড়িয়ে দেয়। এদিন জীবনপুরের মৃত আছাব আলীর ছেলে নবিবর, শ্রীপতিপুরের মৃত আবুলের ছেলে খোকন ও সহযোগী বাদল, ছয়ঘড়িয়ার জাহাঙ্গীর, গোপালপুরের বেলালদের ৬২টি চুল্লি ধ্বংস করে।

অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ হোসেন জানান, অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারণে পরিবেশ দুষণসহ নানা ধরণের রোগীব্যধি ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় এ অভিযান চালানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সবগুলো কারখানায় এ অভিযান চালানো হবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন জানান, স্থানীয় মানুষের দাবীর প্রেক্ষিতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই ধরণের কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত রাখা হবে। সচেতন নাগরিক সমাজ এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। পাশাপাশি তাদের দাবি- বন্ধ নয় ধ্বংস করে ফেলা হোক এ উপজেলায় বছরের পর বছর ধরে চালু থাকা প্রায় ৩০টির অধিক অবৈধ ইটভাটা।

প্রকৃতপক্ষে এসব ইট ভাটার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র, নেই মাটি সংগ্রহের উৎস, এমনকি ভাটা স্থাপনে মানা হয়নি কোনো বিধি-বিধানই। প্রতি বছর ফসলি জমির মাটিতে তৈরি হচ্ছে ইট আর আবাসিক এলাকা ও ফসলি জমিতে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘেঁষে গড়ে ওঠা ভাটাগুলো ক্ষতি করছে প্রকৃতি, পরিবেশ, ফসল ও জনস্বাস্থ্যের। যা রোধে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় কর্তাদের মুখপানে গোবিন্দগঞ্জবাসী। চুল্লির ন্যায় এগুলোতেও নজর দেবে কর্তৃপক্ষ সেটাই দাবি সচেতন মহলের।

(বি:দ্র: সংবাদটি সাপ্তাহিক খোলা হাওয়া পত্রিকার ১৮তম বর্ষের ১৩তম সংখ্যায় (রবিবার, ৬ নভেম্বর ২০২২) প্রকাশিত।)